খনিজ সম্পদে ভরপুর মহাদেশ আফ্রিকা। বিশ্বের বেশিরভাগ মূল্যবান ধাতু যেমন, স্বর্ণ, হিরা, বক্সাইটসহ অনেক খনিজ সম্পদের বিপুল পরিমাণ মজুদ রয়েছে অঞ্চলটিতে। তবে এরই মধ্যে প্রতিবছর আফ্রিকা থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার মূল্যের সোনা অবৈধভাবে পাচার হচ্ছে বলে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সুইস এইড। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক রিপোর্টে এসব তথ্য জানায় সংস্থাটি।
সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক সহায়তা ও উন্নয়ন সংস্থা সুইস এইডের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালে আফ্রিকা থেকে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলারেও বেশি মূল্যমানের ৪৩৫ মেট্রিক টনের বেশি সোনা পাচার হয়েছে। পাচার করা স্বর্ণের বেশিরভাগের গন্তব্যস্থল মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। সেখানে পরিশোধিত হয়ে পরে বিভিন্ন মাধ্যমে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে সোনা। গন্তব্যস্থল হিসেবে তুরস্ক ও সুইজারল্যান্ডের নামও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনের অন্যতম লেখক ইভান শুলৎজ দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানান, তাদের প্রতিবেদনের লক্ষ্য ছিল আফ্রিকান সোনার বাণিজ্যকে আরও স্বচ্ছ করে তোলা। একইসাথে শিল্প খাতের অংশীদারদের উপর সোনার সরবরাহের উৎস সনাক্তকরণ এবং সরবরাহ চেইনকে আরও জবাবদিহিপূর্ণ করে তুলতে চাপ দিতে চান তারা।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, আফ্রিকায় উৎপাদিত সোনার ৩২% থেকে ৪১% পর্যন্ত অঘোষিত রাখা হয়। ২০২২ সালের তথ্যানুসারে আফ্রিকার সর্ববৃহৎ সোনা উৎপাদনকারী দেশ ছিল ঘানা, তারপরেই মালি ও দক্ষিণ আফ্রিকার অবস্থান।
২০১২-২০২২ সালের ১০ বছরের সময়কালে, প্রায় আড়াই হাজার মেট্রিক টন সোনা আরব আমিরাতে অবৈধ পথে পৌঁছেছে যার বাজার মূল্য প্রায় ১১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আফ্রিকান সোনার আরেক প্রধান ক্রেতা সুইজারল্যান্ড, ২০২২ সালে প্রায় ২১ মেট্রিক টন সোনা ঘোষণা না করেই আমদানি করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তৃতীয় দেশগুলির মাধ্যমে আমদানিকৃত আফ্রিকান সোনার পরিমাণ বিবেচনায় নিলে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। তবে সোনা বিশুদ্ধ করার পরে তার প্রকৃত উৎস অনুসরণ করা প্রায় অসম্ভব।
প্রতিবেদনের ব্যাপারে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সুইজারল্যান্ডের প্রশাসনের সাথে কথা বলা হলে, নিজ নিজ দেশের আইন অনুসারে স্বর্ণ চোরাচালান রোধে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
Source: https://apnews.com/article/gold-smuggling-africa-uae-switzerland-e1a614c465766f1c3e90fb9e5a5167a2