এবার যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ন্যাটো সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ভুল করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এই ঘটনায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বাইডেনের মানসিক সুস্থতা নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে ডেমোক্র্যাট নেতাদের মধ্যে।
বৃহস্পতিবার ন্যাটো সম্মেলনে জেলেনস্কিকে বক্তৃতা দেয়ার আহবান জানাতে গিয়ে বাইডেন বলেন, “এখন আমি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে মঞ্চে আহ্বান জানাতে চাই, যিনি সাহস ও সংকল্পে অটল, মহিলাগণ ও মহোদয়গণ, প্রেসিডেন্ট পুতিন।” তবে পরক্ষণেই নিজের ভুল সংশোধন করে বাইডেন বলেন, “প্রেসিডেন্ট পুতিন! তিনি প্রেসিডেন্ট পুতিনকে পরাজিত করবেন। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি, আমি পুতিনকে পরাজিত করার জন্য এতটাই মনোযোগী, যা আমাদের জন্য উদ্বিগ্নের। যাই হোক, মি. প্রেসিডেন্ট।” অবশ্য সম্মেলন কক্ষে নিজের ভাষনে বাইডেনের ভুলকে জেলেনস্কি হাসতে হাসতে উড়িয়ে দিয়েছেন।
বাইডেনের এই ভুলের কারণে সম্মেলন কক্ষে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। তবে ন্যাটোর অন্যান্য নেতারা বাইডেনের পক্ষেই নিজেদের সমর্থন জানিয়েছেন।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলজ বাইডেনের এই ভুলকে অনিচ্ছাকৃত ভুল বলে উল্লেখ করেছেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার বলেন, স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ অবস্থায় ছিলেন বাইডেন।
তবে বাইডেনের এই ভুলকে সহজেই ছেড়ে দিচ্ছেন না ডেমোক্র্যাট নেতারা। প্রেসিডেন্টের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি উদ্বেগ জানিয়ে অনেক ডেমোক্র্যাট নেতা তাকে ২০২৪ সালের প্রার্থীতা ত্যাগ করার আহ্বান জানাচ্ছেন।
প্রায় ১৪ জন ডেমোক্র্যাটিক হাউস সদস্য এবং এক জন ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর বাইডেনকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছেন পার্টির প্রবীণ নেতা ন্যান্সি পেলোসি, হলিউড অভিনেতা এবং বিখ্যাত ডেমোক্র্যাটিক সমর্থক জর্জ ক্লুনিসহ অনেক জনপ্রিয় মুখ।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, অর্ধেকেরও বেশি ডেমোক্র্যাট বাইডেনকে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বন্ধ করার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। দুই-তৃতীয়াংশ আমেরিকানরা বিশ্বাস করে বাইডেনের এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করা উচিত নয়।
তবে নিউইয়র্ক টাইমসের কাছে এই রিপোর্টকে “অস্পষ্টভাবে” মিথ্যা বলে অভিহিত করেছে হোয়াইট হাউস।
এদিকে নভেম্বরের নির্বাচনে নিজের পক্ষে জোর সমর্থন জানাচ্ছেন বাইডেন। ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রাথমিক ভোটগুলোও তারই পক্ষে কথা বলছে বলে দাবি করছেন প্রেসিডেন্ট।
কিন্তু বাইডেনের এসব দাবি আশ্বস্ত করতে পারছে না কোনো পক্ষকেই। এমনকি ন্যাটো মিত্ররাও বাইডেনের নেতৃত্বের সক্ষমতা সম্পর্কে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। তাদের আশঙ্কা, পুতিনের প্রশংসাকারী ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন মিত্রজোটের জন্য বড় একটি সমস্যার কারণ হতে পারে।