জেলে বসেই দিল্লী সরকারকে নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)র করা আবগারী নীতি দূর্নীতি মামলায় গত ২১মার্চ গ্রেপ্তার হন তিনি। এখনো পর্যন্ত রাজ্য সরকারকে দেয়া দুই নির্দেশনার দ্বিতীয়টিতে আজ মঙ্গলবার স্বাক্ষর করেন তিনি। এই নির্দেশনায় দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী সৌরভ ভরদ্বাজকে দিল্লীর মহল্লা ক্লিনিকগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিনামূল্যে ঔষধ সরবরাহ ব্যবস্থা সচল রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এক প্রেস কনফারেন্সে ভরদ্বাজ বলেন, “কেজরিওয়াল কারাগারে থেকেও দিল্লীর মানুষের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে চিন্তিত। তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন দিল্লীর হাসপাতাল ও মহল্লা ক্লিনিকগুলোতে যেন বিনামূল্যের সরবার করা ঔষুধের কোনো ঘাটতি না থাকে সেদিকে কাজ করার জন্য। আমি আমার ডিপার্টমেন্টকে নিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো তার নির্দেশনা পালন করার। আমি দিল্লীর মানুষকে আশ্বস্ত করতে চাই, জেলে থেকেও দিল্লীর মানুষদের জন্য চিন্তা করছেন মুখ্যমন্ত্রী।”
ভারতীয় জনতা পার্টির নেতা হরিশ খুরানা অভিযোগ করেছেন, কেজরিওয়াল “ভিকটিম কার্ড” খেলার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, “আজকে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে, সৌরভ ভরদ্বাজ বলেছিলেন যে অরবিন্দ কেজরিওয়াল দিল্লির জনগণের জন্য চিন্তিত এবং স্বাস্থ্য বিভাগের জন্য একটি নতুন নির্দেশ জারি করেছেন। কিছু দিন আগে, তিনি দিল্লির পানি বিষয়ক বোর্ডের বিষয়ে অতীশিকে একটি নির্দেশ জারি করেছিলেন। হঠাৎ করে তিনি এখন দিল্লি নিয়ে উদ্বিগ্ন! এটা একধরনের নাটক।”
খুরানা আরো বলেন, “কেজরিওয়াল দুর্নীতির কারণে জেলে রয়েছেন। যেই একই মামলায় প্রাক্তন ডেপুটি মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া গত ১৪ মাস ধরে জামিন পাননি। মদ কেলেঙ্কারির মূল হোতা কেজরিওয়াল। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলতেন যে যারা দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হচ্ছেন তাদের পদত্যাগ করা উচিত। কিন্তু এখন তিনি নিজে পদত্যাগ করছেন না এবং কারাগারের আড়ালে থেকে সরকারকে আদেশ দিচ্ছেন।” খুরানা দাবি করেন, যদি সত্যিই কেজরিওয়াল দিল্লি নিয়ে চিন্তিত হন তবে পদত্যাগ করে অন্য কাউকে পরিস্থিতি সামলাতে দেওয়া উচিত তার।
এদিকে কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে তার দল আম আদমি পার্টি দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ মোদীর বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচী দিয়েছে। কিন্তু দিল্লী পুলিশ বলছে এধরনের কোনো কর্মসূচীর অনুমোদন পুলিশ দপ্তর এখনো দেয়নি বা দিবে না। পুলিশের ডেপুটি কমিশনার দেবেশ কুমার মাহলা বলেছেন, তারা প্রধানমন্ত্রী মোদির বাসভবনের চারপাশে অতিরিক্ত নিরাপত্তা মোতায়েন করেছেন। তিনি বলেন, পুলিশ নয়াদিল্লীতে ৫০টি টহল গাড়ি মোতায়েন করেছে। “ইতিমধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে এবং এখানে (নয়া দিল্লীতে) কাউকে জনসমাবেশ করার অনুমতি নেই। আমরা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করেছি। যারা এখানে জনসমাবেশ বা আন্দোলন করবে আমরা তাদের আটক করব,” বলে তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
এছাড়াও কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে দিল্লীতে প্রতিবাদ আন্দোলন করছে আম আদমি পার্টির নেতার কর্মীরা। কেজরিওয়ালের দল আম আদমি পার্টি (এএপি) দাবি করছে এই মামলা ও গ্রেপ্তার সম্পূর্ণ রাজনৈতিক ও হয়রানিমূলক। শহরের প্যাটেল চক মেট্রো স্টেশন থেকে বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দিল্লির মন্ত্রী ও এএপি নেতা গোপাল রাই বলেছেন, “দিল্লির মানুষ বুঝতে পারছে না কীভাবে অরবিন্দ কেজরিওয়াল এখনো কারাগারে যেখানে একই অভিযোগের মামলায় শরদ রেড্ডিকে জামিন দেওয়া হয়েছে। দিল্লির মানুষ অরবিন্দ কেজরিওয়ালের হয়ে লড়াই চালিয়ে যাবে।”
Source: https://www.hindustantimes.com/