সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাশ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থিত প্রস্তাবটিতে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী ও অস্থায়ী ১৫টি দেশের মধ্যে ১৪টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। ভোট প্রদান থেকে বিরত ছিল রাশিয়া।
গত ৩১মে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তিন পর্যায়ের একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ঘোষণা করেছিলেন, যা অনেকটা হামাসের প্রস্তাবের আদলেই তৈরি। তবে সেই প্রস্তাবে ইসরায়েলের জন্য বেশকিছু সুবিধাজনক ধারা উপস্থাপন করেছেন বাইডেন।
প্রস্তাবে প্রথম পর্যায়ে ছয় সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি জিম্মি বিনিময়ের কথা উল্লেখ রয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং অবশিষ্ট বন্দিদের মুক্তি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সর্বশেষ তৃতীয় পর্যায়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত গাজা উপত্যকা পুনর্গঠনে কাজ করার পদক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, নতুন প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছে ইসরায়েল। যদিও এখনো অনেক ইসরায়েলি কর্মকর্তা হামাস সম্পূর্ণ ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন।
নিরাপত্তা পরিষদে পাশের পর নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবটির শর্তাবলী কোনো বিলম্ব এবং শর্ত ছাড়াই পুরোপুরি বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানানো হয়েছে ইসরায়েল এবং হামাসকে।
সোমবার ভোটের পরে হামাস এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, তারা মধ্যস্থতাকারীদের সাথে সহযোগিতা করতে এবং চুক্তির নীতিমালার বাস্তবায়ন নিয়ে পরোক্ষ আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।
তবে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তর থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক গ্যাব্রিয়েল এলিজন্ডো জানিয়েছেন, “নিরাপত্তা পরিষদে পাশ হওয়া ভোট মেনে চলা আন্তর্জাতিক আইনে বাধ্যতামূলক। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এটি কতটা কার্যকর এবং বাস্তবায়ন করা হবে। যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, ইসরায়েল এই প্রস্তাব মেনে নিয়েছে। সুতরাং এটি বাস্তবায়নের জন্য ইসরায়েলের উপর যথেষ্ট চাপ রয়েছে।”
এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দাবি, “বাইডেন প্রস্তাবটির শুধু কিছু অংশ উপস্থাপন করেছেন। হামাসের সামরিক ও শাসন ক্ষমতা ভেঙে ফেলার আগে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির কোনো আলোচনা অগ্রহণযোগ্য।”
অপরদিকে হামাস বারবার বলছে, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, গাজা থেকে সম্পূর্ণ ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং ইসরায়েলি কারাগারে আটক ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময় ছাড়া কোনো চুক্তিতে আগ্রহী নয় তারা।