দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। ৩০ বছরের শাসনের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বড় ধরনের আধিপত্য ঝুঁকির মুখে পড়েছে ক্ষমতাসীন দল এএনসি। ১৯৯৪ সালে বর্ণবাদী শ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘু শাসন থেকে দক্ষিণ আফ্রিকাকে মুক্ত করেছিল এএনসি। তারপর থেকেই দেশটির জাতীয় নির্বাচনে অনায়াসেই বিজয়ী হয়ে আসছে দলটি।
বিশ্বে দ্রুত অর্থনৈতিকভাবে বর্ধনশীল দেশগুলোর মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা একটি। কিন্তু বর্তমানে দেশটির ৬২ মিলিয়ন জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই দারিদ্র্যে বসবাস করছে। এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে নতুন প্রজন্মের মাঝে। সাথে রয়েছে দেশটির ৩২% বেকারত্বের হার। দীর্ঘদিনের অসমতা, দরিদ্রতা এবং বেকারত্ব কালো সংখ্যাগরিষ্ঠদের বিশেষভাবে প্রভাবিত করছে। ফলে একক ক্ষমতা হারানোর হুমকিতে রয়েছে এএনসি দল।
নিজ এলাকায় ভোট দেওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা এএনসির সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়লাভের আশা প্রকাশ করেন। তবে পরিসংখ্যান বলছে ভিন্ন কথা। পরপর ছয়টি জাতীয় নির্বাচন জেতা এএনসি এবারের নির্বাচনে সমর্থন ৫০শতাংশের নিচে নেমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে সরকার গঠনে অন্য দলের সাথে জোট বাঁধতে হতে পারে ঐতিহ্যবাহী দলটিকে।
২০১৯ সালের শেষ জাতীয় নির্বাচনে এএনসি ৫৭.৫% ভোট পেয়েছিল, যা দলটির সবচেয়ে খারাপ ফলাফল হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৯৪ সাল থেকে এএনসি সবসময় পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রেখেছে।
এদিকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা বড় দুই বিরোধী দল, ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স এবং ইকোনমিক ফ্রিডম ফাইটার্সের, এএনসির চেয়ে বেশি ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। যদিও সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার দল ডিএ, অন্যান্য ছোট দলগুলির সাথে মিলে এএনসিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চাচ্ছে, যা বাস্তবে প্রায় অসম্ভব বলছেন রাজনীতিক বিশ্লেষকরা।
শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে দেশ জুড়ে প্রায় তিন হাজার সেনা মোতায়েন করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে নয়টি প্রদেশে ২৮ মিলিয়ন মানুষ ২৩,০০০ টিরও বেশি ভোটকেন্দ্রে ভোট দিবে। আগামী শনিবার নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে।
Source: https://apnews.com/article/south-africa-election-anc-vote-db201bc1aa21a1d986d50af1674a8e78