সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন পিয়ংইয়ংয়ে হাসি-মজায় অরাস লিমোজিনে চড়ে বেড়ানোর ছবি ভাইরাল হয় নেট দুনিয়ায়। অনেকের মতে এটি তাদের শক্তিশালী অ্যান্টি-ওয়েস্টার্ন জোটের প্রদর্শনী। এই বিলাসবহুল সেডান গাড়িটি ২০১৮ সালে বাজারে আসে। এটি রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ ক্ষমতা এবং আমদানির প্রযুক্তি ও পণ্যের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দেয়ার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল।
তবে কাস্টমস রেকর্ডে বেরিয়ে এসেছে এক অন্য তথ্য। জানা যায় এই গাড়ির নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি মিলিয়ন ডলারের আমদানিকৃত যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে। তাও এসব যন্ত্রাংশের কিছু আনা হয় দক্ষিণ কোরিয়া থেকে। যা কিমের দেশের প্রধান শত্রু হিসেবে বিবেচিত।
এই আমদানি রেকর্ড প্রকাশ করে, রাশিয়া এখনও পশ্চিমা প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল। যদিও তারা ইউক্রেন আক্রমণের কারণে আরোপিত পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলা করার চেষ্টা করছে।
সম্প্রতি পুতিন উত্তর কোরিয়ায় প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রীয় সফরে অংশ নিয়েছিলেন এবং তারা পালাক্রমে আর্মার্ড লিমোজিনটি চালিয়েছিলেন, যা তাদের দুটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশের ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের প্রদর্শনী ছিল।
রয়টার্সের কাস্টমস রেকর্ড থেকে জানা যায়, রাশিয়া ২০১৮ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে অরাস গাড়ি এবং মোটরসাইকেল তৈরির জন্য কমপক্ষে ৩৪ মিলিয়ন ডলারের যন্ত্রাংশ এবং উপাদান আমদানি করেছে, ।
এই আমদানিকৃত পণ্য গুলোর মধ্যে গাড়ির বডি পার্টস, সেন্সর, প্রোগ্রামেবল কন্ট্রোলার, সুইচ, ওয়েল্ডিং যন্ত্রপাতি এবং অন্যান্য উপাদান অন্তর্ভুক্ত ছিল। যার প্রায় ১৫.৫ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আমদানি করা হয়েছিল।
অরাস সেডানটি রাশিয়ার রাষ্ট্র-মালিকানাধীন গবেষণা ইনস্টিটিউট নামি এবং রাশিয়ান কারমেকার সোলার্স (এসভিএভি.এমএম) এর সহযোগিতায় তৈরি করা হয়, যারা পরবর্তীতে তাদের শেয়ার বিক্রি করে দেয়। অরাস মোটরস এবং এর সিইও আন্দ্রে প্যাঙ্কভ দক্ষিণ কোরিয়ার অংশসহ বিদেশী যন্ত্রাংশ ব্যবহারের বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হন নি।
প্রতিষ্ঠানটি ২০২১ সালে রাশিয়ার তাতারস্তান অঞ্চলে আনুষ্ঠানিক উৎপাদন শুরু করে। এর আগে এটি নামিতে ছোট, পরীক্ষামূলক মাত্রায় তৈরি করা হতো।
প্রতিষ্ঠানটি এই বছর টয়োটা’র সাবেক কারখানায় সেন্ট পিটার্সবার্গে অতিরিক্ত উৎপাদন শুরু করবে বলে জানা যায়।